মায়ের কোলে শিশুর মোবাইল দেখা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ আছে, যা মূলত দুটি দিকের উপর জোর দেয়:
১. শিশুর বিকাশে মায়ের মনোযোগের অভাব:
- গবেষণায় দেখা গেছে, ছোট শিশুসন্তান থাকা যে মায়েরা স্মার্টফোন নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন, তারা সন্তানের সাথে অনেক কম কথা বলেন (কিছু গবেষণায় ২৬% পর্যন্ত কম কথা বলার তথ্য পাওয়া গেছে)।
- সন্তানের সাথে কম কথা বলা এবং মিথস্ক্রিয়া (interaction) কমে যাওয়ার কারণে শিশুর ভাষার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
- মায়ের ফোন আসক্তির কারণে শিশুর প্রতি তার মনোযোগ কমে গেলে, শিশু নিরাপত্তাহীনতা বা অবহেলা অনুভব করতে পারে, যা তাদের আচরণগত সমস্যা এবং আবেগিক বুদ্ধি (emotional intelligence) বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
২. শিশুর সরাসরি মোবাইল ব্যবহার বা স্ক্রিন টাইম:
- অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম (মোবাইল, ট্যাবলেট, টিভি দেখা) শিশুর মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি, এবং আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
- বিশেষজ্ঞরা সাধারণত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের একেবারেই স্ক্রিন টাইম না দেওয়ার পরামর্শ দেন। ২ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য দিনে ১ ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম উচিত নয় বলে মনে করা হয়।
- মোবাইল দেখলে শিশুরা বাইরের জগত ও তাদের চারপাশের মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে, যা তাদের সামাজিক ও মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
করণীয়:
- সময় নির্দিষ্ট করুন: যখন শিশুর সাথে থাকবেন বা তাকে দুধ খাওয়াবেন, তখন মোবাইল ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। এই সময়টুকু শিশুর সাথে কথা বলুন এবং চোখাচোখি (eye contact) করুন।
- বিকল্প ব্যবস্থা: শিশুকে শান্ত রাখা বা ব্যস্ত রাখার জন্য মোবাইলের পরিবর্তে খেলনা, বই বা সৃজনশীল খেলার ব্যবস্থা করুন।
- নিজে সচেতন হোন: আপনার মোবাইল ব্যবহারের অভ্যাস শিশুর উপর কী প্রভাব ফেলছে, সে বিষয়ে সচেতন থাকুন এবং প্রয়োজনে নিজের ব্যবহারের সময় কমিয়ে আনুন।
আপনার বা আপনার পরিচিত কারো এই বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট উদ্বেগ থাকলে, একজন শিশু বিশেষজ্ঞ বা শিশু মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নেওয়া ভালো।
সংগৃহীত