১.যথাযথ শব্দ প্রয়োগ করে অনুৃমতি না নেয়াঃ
ভাইভা বোর্ডে প্রবেশের পূর্বে 'স্যার আমি কি আসতে পারি' বা ''May I come in sir' বলে অনুমতি নিতে হবে।সাধারণত আপনি যে ভাষায় অনুমতি চাইবেন,পরবর্তীতে সেই ভাষায় প্রশ্ন করা হতে পারে।তাই আপনার সুবিধা মাফিক ভাষা ব্যবহার করুন।
২.রুমে প্রবেশ করে দরজা না লাগানোঃ
রুমে প্রবেশ করে সঠিকভাবে দরজা না লাগালে বোর্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।তাই শান্ত পদক্ষেপে প্রবেশ করে এমনভাবে দরজা লক্ড করুন যাতে কোনো শব্দ না হয়।
৩.অসম্পূর্ণ সম্ভাষণ করাঃ
প্রত্যেক ধর্মের রীতি অনুযায়ী সম্পূর্ণভাবে সম্ভাষণ করা উচিত। সালাম প্রদান করলে তা পরিপূর্ণ ও স্পষ্টভাবে বলতে হবে। সালাম হচ্ছে একধরনের আশীর্বাদ ও দোয়া, তাই তা বিকৃত করার কোনো সুযোগ নেই।
৪. দরজায় দাঁড়িয়ে সম্ভাষণ করাঃ
কিছু কিছু প্রার্থী রুমে প্রবেশ না করেই দরজায় দাঁড়িয়ে সালাম প্রদান করে থাকেন।এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত। আপনি রুমে প্রবেশের পর আপনার জন্য বরাদ্দকৃত আসনের সামনে যেয়ে সুন্দর ও স্পষ্ট করে সালাম দিন।
৫.ম্যাডাম সম্বোধন করাঃ
ভাইভা বোর্ডের সকল সদস্যকে স্যার সম্বোধন করতে হবে। বোর্ডে কোনো নারী সদস্য থাকলেও তাকে ম্যাডাম/ম্যাম সম্বোধন না করে স্যার সম্বোধন করা বাঞ্ছনীয়।
৬.মুদ্রাদোষ প্রদর্শন করাঃ
ভাইভা বোর্ডে সকল ধরনের মুদ্রাদোষ পরিহার করতে হবে।টেবিলের উপর হাত রাখা,হাত-পা নাড়ানো কিংবা যেকোনো ধরনের আঞ্চলিকতা বোর্ডে নেতিবাচক ইমেজ সৃষ্টি করবে।
৭.ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করাঃ
বোর্ডে ওভারস্মার্টনেস দেখানো,ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল উত্তর দেয়া,বোর্ডকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা এবং যেকোনো ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি করা ভাইভায় ফেল করার অন্যতম কারণ। 'আগে জানতাম এখন ভুলে গেছি' এভাবে বলাও ঔদ্ধত্য প্রদর্শনের শামিল।
৮.সরকার বা রাষ্ট্র বিরোধী কিছু বলাঃ
আপনি সিভিল সার্ভিসে যোগদানের মাধ্যমে সরকার ও রাষ্ট্রের সেবা করতে যাচ্ছেন,তাই কখনোই সরকারের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো কথা বোর্ডে বলা যাবে না।
৯.তথ্য গোপন করাঃ
ফরম ফিল-আপ করেছেন একভাবে,কিন্তু বোর্ডে উপস্থাপন করলেন অন্যভাবে। এমন ভুল করলে নিঃসন্দেহে বোর্ড আপনাকে ফেল করাবেন।
১০.নার্ভাস হয়ে যাওয়াঃ
ভাইভা বোর্ড কখনোই আপনাকে ফেইল করাতে চায় না,যদি না আপনি নিজে থেকে ফেইল করেন।বোর্ডে আপনি যদি এতোটাই নার্ভাস হয়ে যান যে,আপনার মুখ থেকে কিছুই বের হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে বোর্ড আপনাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন, এরপরও যদি আপনি স্বাভাবিক না হতে পারেন,তাহলে সিভিল সার্ভিসের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা আপনার নেই।একেবারেই প্রস্তুতি না নিয়ে ভাইভা বোর্ডে উপস্হিত হলে এমন অনাকাঙ্খিত অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
১১.What is your father or mother বললে নাম বলে দেয়াঃ
এই প্রশ্নের উত্তরে আপনার বাবা বা মা কী করেন,অর্থাৎ তাদের পেশা সম্পর্কে বলতে হবে।
১২.বাড়ি কোথায় বললে শুধু জেলার নাম বলাঃ
বাড়ি কোথায় বললে আপনার পূর্ণ ঠিকানা বলুন।আপনি বলতে পারেন-আমার বাড়ি কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। আর What is your home district বললে শুধু জেলার নাম বলবেন।
১৩.রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তির নাম অসম্পূর্ণ বলাঃ
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম জিজ্ঞেস করলে তাঁদের সম্পূর্ণ নাম বলবেন।নামের শুরুতে মহামান্য বা মাননীয় ইত্যাদি উপযুক্ত বিশেষণ যুক্ত করে বলা উচিত।এভাবে বলতে পারেন,বাংলাদেশের বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুূদ্দিন।শুধু 'সাহাবুদ্দিন' বললে ভুল হবে।
১৪.স্হানীয় সরকার ও মাঠ প্রশাসনের মাঝে তালগোল পাকিয়ে ফেলাঃ
অনেক প্রার্থীই স্হানীয় সরকার ও মাঠ প্রশাসনের মাঝে পার্থক্য ভালোমতো না জানার দরুণ ভাইভার সময় তা গুলিয়ে ফেলেন।তাই এদুয়ের পার্থক্য আত্নস্হ করে নিবেন। একইভাবে রাষ্ট্র ও সরকারের মাঝে ব্যবধানও অনেকে ভুল করে থাকেন।সরকার রাষ্ট্রের একটি উপাদান মাত্র,এই বিষয়টা স্পষ্টভাবে বলতে হবে।
১৫. ইংরেজি প্রশ্নের উত্তর বাংলায় করা এবং বাংলা প্রশ্নের উত্তর ইংরেজিতে করাঃ
এমন ভুল করলে বোর্ড অসন্তুষ্ট হতে পারেন।
আপনাকে যেই ভাষায় প্রশ্ন করা হবে,সেই ভাষায় উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবেন।অন্য ভাষায় দিতে চাইলে অনুমতি নিয়ে তারপর উত্তর করবেন।
১৬.ভাইভা শেষে পিছু হাঁটা না করাঃ
ভাইভা শেষ করে দুএক কদম পিছু হেঁটে স্বাভাবিকভাবে ফিরে আসুন।একদম দরজা পর্যন্ত পিছু হাঁটার প্রয়োজন নেই।
ভাইভা শেষ করে অপেক্ষমান প্রার্থীদের সাথে আলোচনা না করে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।
Reference.
মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন
৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার(সমাজকল্যাণ)
মেধাক্রম-সপ্তম