প্রথম কথা হলো কতজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এরকম মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে, হাতেগোনা কয়েকজন, অধিকাংশই ঝড়ে পড়ছে একটা দুইটা কন্টেন্ট ক্রিয়েট করে। যারা এরকম লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় করছে। আপনার কাছে যতো ক্রিঞ্জই লাগুক, তারা তাদের ক্রাউডের কাছে এন্টারটেইনার। সোশ্যাল মিডিয়ার এতো বিধিনিষেধ, নিয়ম শৃঙ্ক্ষলার মধ্যে থেকে দিনের পর দিন কন্টেন্ট ক্রিয়েট করে যাওয়া যে কতটা টাফ সেটা যারা এই প্লাটফর্মগুলো থেকে আয় করতে যায় সবাই বুঝে। দুই একজন হয়তো লাকলি ভাইরাল হয়ে যায়, কিন্তু তারা যদি এই কন্টেন্ট ফ্লো চালু না রাখে তবে কালের গর্ভে হারিয়ে যায়। দিন শেষে যারা এরকম দিনের পর দিন কন্টেন্ট ক্রিয়েট করে যাচ্ছে, তারা তাদের ইনকাম ডিসার্ভ করে।
আমাদের অবস্থা হয়েছে সেই ছাত্রের মতো, "পড়ালেখা করলে আমিও অনেক ভালো রেজাল্ট করতাম।" আরেহ ভাই, তুমি পড়ালেখা করতে পারো না বলেই তো তুমি ভালো রেজাল্ট ডিসার্ভ করো না। ভালো রেজাল্ট করা বা ভালো ছাত্র হওয়ার পূর্ব শর্ত হলো নিয়মিত পড়ালেখা করে যাওয়া। অপুভাই, ফুডাপ্পি, তৌহিদ আফ্রিদি, রাফসান- আমি কন্টেন্ট ক্রিয়েট করলে এদের চেয়ে ভালো করতাম৷ আরেহ ভাই, এরকম দিনের পর দিন কন্টেন্ট ক্রিয়েট করে যান না, দেখেন না কতো ধানে কতো চাল। আপনি কোয়ালিটি কন্টেন্ট ক্রিয়েট করেন না দেখে এরা চান্স পায়। আপনি কোয়ালিটি কন্টেন্ট বানান, মানুষ আপনারটা দেখবে।
আর জে কিবরিয়া ইয়াহিয়া আমিনের পডকাস্টে "পাওয়ার অফ কন্টেন্ট" এর একটা ব্যক্তিগত ঘটনা বলেছিলেন। বাংলাদেশের বিশাল এক কনগ্লোমারেট এর প্রধানের মা আরজে কিবরিয়ার শো দেখে এবং তার ছেলেকে কিবরিয়ার সাথে কাজ করার জন্য উপদেশ দেয়। সেই মায়ের ছেলে কিবরিয়াকে তাদের ওখানে যাওয়ার অনুরোধ করতে থাকে, কিন্তু কিবরিয়া সময় করে উঠতে না পারায় সেই মালিক একদিন তার দলবল নিয়ে কিবরিয়ার ছোট স্টুডিওতে উপস্থিত হয় এবং অনুরোধ করতে থাকে কিভাবে একসাথে কাজ করা যায়। সেদিন কিবরিয়া রিয়ালাইজ করেছিলেন, দ্যা পাওয়ার অফ কন্টেন্ট।
ইয়াহিয়া আমিনও তার অন্য পডকাস্টগুলোতে বলতে থাকে, "আপনি যে-ই হন, আপনাকে কন্টেন্ট ক্রিয়েশনে আসতে হবে।" আপনি যদি ডাক্তার হন, সাথে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হন, তবে অন্য ডাক্তারদের থেকে এগিয়ে থাকবেন, লুক এ্যাট ডা.জাহাঙ্গীর কবির। আপনি যদি এঞ্জিনিয়ার হন সাথে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হন, তবে অন্য এঞ্জিনিয়ার থেকে কাজ পাবেন বেশি। সহজ কথা যেকোন প্রফেশনে থেকে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে চাইলে তাকে কন্টেন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। নাহলে, বড় ডিগ্রী নিয়ে হাহুতাশ করতে হবে, কেনো ডা. জাহাঙ্গীর আমার চেয়ে বেশী ইনকাম করে।
আমার মামাতো ভাই যে এখন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে ডাক্তারি পড়ে, মেট্রিকে পড়ার সময় মাথায় ক্যারা উঠলো, ফটোগ্রাফার হবে, ইউট্যুবার হবে, ডিএসএলআর কিনে না দিলে সে আর পড়াশোনা করবে না। যাইহোক, সে যাত্রায় তাকে কোনমতে মানানো গেলো, বেচারা পড়াশোনা শুরু করলো, মেডিকেলে চান্স পেলো, টিউশনি করায়, ভর্তি কোচিং এ ক্লাস নেয়, নিজের টাকায় ডিএসএলআর কিনলো। এখন আমি তাকে প্রোভোক করি, তার পুরনো শখ পুরণ করার। বি আ কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। তুমি তোমার পড়াশোনাগুলাই আপ করতে থাকো অনলাইনে, ক্লাসগুলো টেলিকাস্ট করো, ছোট ছোট ভিডিও বানাও, সমসাময়িক ডাক্তারদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে অনেকখানি।
আমি একজন ছোট কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, আমার পেনিট্রেশন অনেক কম। কিন্তু এই অল্প লেভারেজেই যে এতো এতো অপরচ্যুনিটি পেয়েছি তা কল্পনার বাইরে। ডোন্ট আন্ডারস্টেটিমেট দ্যা পাওয়ার অফ কন্টেন্ট। ক্রিঞ্জ ক্রিঞ্জ বলে বলে, ইউসলেস প্লাটফর্ম বলে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে শুধু অন্যদের এগিয়ে যাওয়া দেখবেন আর আফসোস করবেন কেনো তার ইনকাম আমার চেয়ে বেশী।
বাজারে যতো পচামাছই থাকুক, সেটার কাস্টমার আছে। আপনার লেখার হাত যতো খারাপই হোক, ভিডিও কোয়ালিটি যতো বাজেই হোক, দেখবেন সেটারও ক্রাউড পাবেন। আর গাইতে গাইতে গায়েনের মতো কোনদিন আপনার কন্টেন্ট লক্ষ লক্ষ মানুষের কাজে লাগছে চিন্তাও করতে পারবেন না। সো, ডোন্ট হেসিটেট টু স্টার্ট। যে প্রফেশনেরই হন, আপনার ক্রাউড বুঝে কন্টেন্ট ক্রিয়েট শুরু করুন, অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবেন অনেকখানি, এমন এমন সুযোগ আসতে থাকবে যা কখনও চিন্তাও করেননি।
Credit: Sagor Hasnat vai