Type Here to Get Search Results !

ভাইবা পরীক্ষায় যেসব তথ্য অবশ্যই জেনে যাবেন

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ভাইভা নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া এভাবেই ব্যক্ত করেন বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জনাব মোঃ সোহেল মারুর স্যার।
০৫/০৯/২০২২খ্রি.
-------------------------------------------------------------

টানা প্রায় দেড় মাস প্রতিদিন প্রায় ১২ ঘন্টা প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রায় ৪১০০ জন পরীক্ষার্থীর ভাইভা নিয়ে আজ ৫ সেপ্টেম্বর বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সোহেল মারুর তার নিজের ফেইসবুক ওয়ালে অভিজ্ঞতা এভাবেই শেয়ার করেন, নিচে তা হুবহু তুলে ধরা হলো।

অভিজ্ঞতা হলো সার্বিক বিষয়ে। যুব সমাজের পড়াশোনার প্রবণতা, শিক্ষার মান,তাদের ভাবনা, দেশের সামগ্রিক শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর দক্ষতা সব বিষয়ে সম্যক জ্ঞান লাভ করলাম।

বুয়েট, সরকারি মেডিক্যাল কলেজের কোন ছাত্র-ছাত্রী পাইনি।তবে সরকারি ডেন্টাল কলেজের একজন পেয়েছিলাম। এছাড়া সকল ভার্সিটির পরীক্ষার্থী পেয়েছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়ে পেয়েছি।
কিছু ভালো ছেলে-মেয়ে পেয়েছি স্বাভাবিকভাবেই।
তবে সামগ্রিক প্রবণতা হতাশাজনক।

ভাইভাতে আমাদের সামগ্রিক ফোকাস ছিল মূলত কয়েকটি বিষয়ে।
১.নিজ জেলা
২. বঙ্গবন্ধু,মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ
৩. পরীক্ষার্থীদের পঠিত বিষয় (ডিগ্রি,অনার্স-মাস্টার্স)
৪. বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজি ব্যাকরণ ( যা প্রাইমারিতে প্রয়োজন)
৫. প্রাথমিক গণিত
৬. সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড

বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী তাদের নিজ জেলা সম্পর্কে তেমন কিছুই বলতে পারেনি( প্রায় ৯৮%)। নমুনা প্রশ্ন যেমন এ জেলায় কয়টি উপজেলা, কয়টি ইউনিয়ন,  এ বিভাগে কয়টি জেলা এসব প্রশ্নের উত্তর তারা দিতে পারেনি। কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম,বীর মুক্তিযোদ্ধা বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম তারা জানে না।৩/৪ টি নদীর নাম তাদের মনে নেই।
ইংরেজি সামগ্রিক জ্ঞান ভয়াবহ।Syllable কয় প্রকার বলতে পারেনি প্রায় ৯৭ ভাগ পরীক্ষার্থী।
বরিশাল কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত - এটার ইংরেজি করতে পারেনি ৯৯ ভাগ পরীক্ষার্থী।  তাদের বেশিরভাগ শোনেনি bank of the river শব্দগুলো।
সার্বিকভাবে ইংরেজি কিছুই জানে না এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৯০ ভাগ।
জাতীয় ৪ নেতার নাম বলতে পারেনি প্রায় ৮৫ ভাগ শিক্ষার্থী।
জাতীয় দিবস কোনটি উত্তর দিতে পারেনি ৭০ ভাগ পরীক্ষার্থী।
নিজের বিষয়ের Basic জানে না ৯৬ ভাগ পরীক্ষার্থী।
ভাইভাতে মেয়েদের শাড়ি পরা উচিত এটা জানে না ৭৫ ভাগ মেয়ে পরীক্ষার্থী।

বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজি ব্যাকরণ ৮০ ভাগের তেমন কোন ধারণা নেই। নমুনা প্রশ্ন ছিল শব্দ কয় প্রকার,  এক কথায় প্রকাশ,সমাস কি।
English phrase সম্পর্কে ধারণা নেই প্রায় ৮৫ ভাগ ছাত্র-ছাত্রীর।
যে প্রতিষ্ঠানে পড়েছে সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানে না পায় ৯৫ ভাগ পরীক্ষার্থীর। তাদের ৪/৫ বছরে এটা নিয়ে আগ্রহও জাগেনি।।।
নিরাশার আরও জায়গা ছিল। ৯৯ ভাগ পরীক্ষার্থী বাক্য লিখে শেষে বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করেনি।ইংরেজি বাক্যের শেষে Full stop ব্যবহার করেনি।জিজ্ঞেস করলে বলেছে, ফেসবুকে লিখে তারা অভ্যস্ত তাই বিরাম চিহ্নের ব্যবহার মনে ছিল না!!!

করোনাভাইরাসকালীন সময়ে অনেক ছেলে-মেয়ে চাকুরির আবেদন করতে পারেনি কাজেই অনেকের বয়স শেষ। তার অর্থ হচ্ছে, অনার্স-মাস্টার্স পাশ অনেক ছেলেমেয়ে আজীবন বেকার থেকে যাবে।তবে এটা সঠিক তাদের পড়াশোনার মান অত্যন্ত খারাপ ছিল, তারা নিজেরাও নিজের গুনগত মান বাড়ানোর চেষ্টা করেছে বলে মনে হয় না।
অনেককে জিজ্ঞেস করেছি তারা তেমন কিছুই পারে না কেন? সবাই বলেছে,তারা সব জানে কিন্তু ভাইভার টেনশনে তারা বলতে পারছে না!!!!

এখন যারা পড়াশোনা করছে তাদের শুধু বলতে চাই, সামনের দিনগুলোতে নিজের পণ্য নিজেকেই বিক্রি করতে হবে অর্থাৎ তোমাকেই প্রমাণ করতে হবে তুমি যোগ্য, যোগ্যতা ছাড়া কেউ কাউকে নিবে না, চাকুরী দিবে না।।।।বিশেষ করে ইংরেজিতে অনেক দক্ষ না হলে ভালো কিছুই করার সুযোগ থাকবে না- হোক সেটা নিজস্ব উদ্যোগ বা চাকুরী!!
এটা শিক্ষার সার্বিক হতাশাজনক মানকে যেমন উপস্থাপন করেছে ঠিক তেমনি আমাদের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুনভাবে কর্মমুখী  শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরেছে বলে আমার মনে হয়েছে।

এখান থেকে পরবর্তীতে যারা ভাইভা দিবেন , অনেক কিছু ধারণা পাবেন।
গদবাধা বাজারের খালি ভাইভার বই পড়লেই হয় না , কি কি জানতে হবে এটাই আগে জানা উচিৎ।

যাইহোক , সবার জন্য শুভ কামনা।
সংগৃহীত

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Search This Blog