আয়কর রেয়াত পেতে সময় থাকতে বিনিয়োগ করুন।
২০২১-২০২২ অর্থবছর শেষ হতে আর মাত্র ৪৫ দিন বাকি। এই ৪৫ দিনের (৩০শে জুন) মধ্যে সরকার নির্ধারিত খাতে বিনিয়োগ বা দান করে আপনি আয়কর রেয়াত পেতে পারেন। আয়কর রেয়াত হলো— আপনার করযোগ্য আয়ের ওপর আয়কর হিসাব করার পর সেখান থেকে নির্দিষ্ট হার অনুযায়ী করছাড়ের সুবিধা।
আয়কর রেয়াত পেতে হলে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত কিছু খাতে বিনিয়োগ করতে হবে। আসুন প্রথমেই বিনিয়োগের খাতসমূহ দেখে নেওয়া যাক—
★ শেয়ার বাজারে নিবন্ধিত কোন শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড অথবা ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ,
★ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ,
★ কোন সিডিউল ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে সর্বোচ্চ বাৎসরিক ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত ডিপিএস,
★ জীবন বীমা প্রিমিয়াম (বাৎসরিক মোট বীমাকৃত অংকের সর্বোচ্চ ১০%),
★ রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সেভিংস সার্টিফিকেট ক্রয়,
★ স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ডে কন্ট্রিবিউশন ইত্যাদি।
এছাড়া সরকার অনুমোদিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করেও আপনি কর রেয়াতের সুবিধা পেতে পারেন। সেগুলো হলো—
★ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অনুমোদিত কোনো দাতব্য হাসপাতালে দান,
★ সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরের অনুমোদিত প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে দান,
★ যাকাত ফান্ড অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যাকাত ফান্ডে অনুদান,
★ বাংলাদেশে আগা খান উন্নয়ন কর্মসূচী-এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো আর্থ-সামাজিক বা সাংস্কৃতিক উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানে দান,
★ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে অনুদান,
★ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে অনুদান,
★ জাতির পিতার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে অনুদান ইত্যাদি।
কর রেয়াতের জন্য বিনিয়োগ ও দানের খাতগুলো প্রথম ছবিতে দেখুন।
এখন আসুন কীভাবে কর রেয়াত হিসাব করবেন তা জেনে নেওয়া যাক—
এক্ষেত্রে প্রথমেই তিনটি হিসাব করতে হবে—
১. আপনার মোট করযোগ্য আয়ের ২৫% (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া),
২. দেড় কোটি টাকা,
৩. আপনার প্রকৃত বিনিয়োগকৃত টাকা।
উল্লিখিত তিনটি অংকের মধ্যে যেটি সবচেয়ে কম হবে সেটিই হলো রেয়াতের জন্য অনুমোদনযোগ্য অংক (Eligible Amount), যার উপর আপনি আয়কর রেয়াত পাবেন। কত রেয়াত পাবেন সেটা আপনার মোট আয়ের ওপর নির্ভর করে। আপনার মোট আয় ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে অনুমোদনযোগ্য অংকের ১৫% রেয়াত পাবেন; আর মোট আয় ১৫ লক্ষ টাকার অধিক হলে রেয়াত পাবেন অনুমোদনযোগ্য অংকের ১০%।
এখানে মোট আয় বলতে করযোগ্য আয় বোঝায়।
২, ৩ ও ৪ নম্বর ছবিতে আয়কর রেয়াত কীভাবে হিসাব করতে হবে তা দেখানো হয়েছে।
আশা করি, সবাই বুঝতে পেরেছেন। কোনো প্রশ্ন থাকলে মন্তব্যে জানাতে পারেন।
তথ্যসূত্র : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।