Students Talk Time বাড়ানোর উপায় সমূহ
#সকল শিক্ষকের অভিপ্রায়, শিক্ষার্থীরা শ্রেণিতে যেন পাঠটাকে ভাল করে আয়ত্ত্ব করতে পারে। সেজন্য পাঠের কঠিন অংশটুকুর বেশি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে শিক্ষক সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকেন। এতে শিক্ষক শ্রেণিতে পাঠের সময় বেশি ব্যয় করে আর চিন্তা করেন শিক্ষার্থীরা বেশী লাভবান হয়ে থাকে।
#কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, পাঠে শিক্ষকের দীর্ঘ কথনে শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোযোগ কমে যায়। এক ঘেয়েমি লাগে, এক ব্যক্তির অতি ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ক্লান্তিকর, পাঠ অনুসরণ কঠিন মনে হয়! শিক্ষার্থীদের পাঠে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ কমে যায়। শিক্ষার্থীদের শিখনে আগ্রহী করে না। পাঠটি হয়ে যায় শিক্ষক কেন্দ্রিক! সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের শিখন হ্রাস পায়।
#বলা হয়ে থাকে সর্বোচ্চ গড়ে ২০%-৩০% সময় শিক্ষক ক্লাসে নিবেন আর ৭০%-৮০% সময় গড়ে শিক্ষার্থীরা তাদের চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করবে। তবে শিক্ষকের Talk Time ৩০% হলেও এক নাগাড়ে ১০ মিনিটের বেশি সময় নিবেন না। শ্রেণিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের Talk Time সর্বোচ্চ ৩:১ হওয়া উচিত। তবে বিশেষ বিশেষ জটিল টপিকে শিক্ষক ৫০% বা তার চেয়ের বেশি সময় নিতে পারবেন। তবে ভাষা শিক্ষার ক্লাসে শিক্ষার্থী -শিক্ষকের Talk Time ৭০/৩০ ফিগার হওয়া উচিত।
#শিক্ষকের Talk Time কমানোর কিছু উপায়:
#জোড়ায়/গ্রুপে/টিমে কাজ:
#শ্রেণির শিক্ষাথীদের জোড়ায়/গ্রুপে/টীমে আলোচনা বা কাজ করার সুযোগ দিলে শিক্ষার্থীদের Talk Time বেড়ে যায়। ভাষা শিখনে শিক্ষকের কথন হ্রাস হয়ে শিক্ষার্থীদের কথা বলার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
#ক্লাসে বিভিন্ন ছবি, ম্যাপ, চার্ট টানিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মতামত, ভাবনা জানতে চেয়ে STT বাড়াতে পারেন।
#Body language, mime, gesture and facial expression এর মাধ্যমে শিক্ষক TTT কমিয়ে আনতে পারে।
#শ্রেণিতে বদ্ধ প্রশ্নের (close-ended) চর্চা না করে উন্মুক্ত/খোলা (open-ended) প্রশ্নের মাধ্যমে Teacher Talk Time (TTT) কমিয়ে এনে Student Talk Time(STT) বৃদ্ধি করার সুযোগ আছে। আজকের আবহাওয়া গরম না ঠান্ডা? এ ধরনের বদ্ধ প্রশ্নের উত্তর এক কথায় বা শব্দে বা হ্যাঁ/না দিয়ে শিক্ষার্থীরা উত্তর দিয়ে থাকে, এতে STT বাড়ে না। কিন্তু আজকের আবহাওয়া গরম/ঠান্ডা কেন? বা কারণ এ ধরনের উন্মুক্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে শিক্ষার্থীদের অনেক কথা বলতে হয় বিধায় STT বেড়ে যায়।বা নিজের ভাষায় বর্ণনা করার সুযোগ দিয়ে STT বাড়ানো যায়।
#শিক্ষকের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষক যদি' কিন্তু '/'কেন'/'কারণ 'শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলেও STT বাড়ানোর একটা কৌশল হতে পারে। এ ছাড়াও 'কী' 'কীভাবে' ' কখন' ইত্যাদি শিক্ষার্থীদের কাছে উত্থাপন করেও STT বাড়ানো যায়।
#শিক্ষক ক্লাসে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে প্রচুর TTT ব্যয় করে। তাই, নির্দেশনা পরিকল্পিত ও স্পষ্ট হলে TTT কমিয়ে আনতে পারবেন।
#শিক্ষক এমনভাবে পাঠ পরিকল্পনা ডিজাইন করবেন যাতে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক টাস্ক বেশী থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বেড়ে গেলেই STT বেড়ে যাবে।
#শিক্ষক ক্লাসে মাঝে মাঝে চুপ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য আলোচনা উন্মুক্ত করে দিলে STT বৃদ্ধি করা যায়।
#শিক্ষার্থীরা কী শিখল বা জানলো তা তারা শিক্ষককে বা অন্য শিক্ষার্থীদেরকে শেখানোর কৌশলে STT বৃদ্ধি করা যায়।
#শিক্ষক নিজেকে সহায়কের ভূমিকায় রাখবে। শিক্ষার্থীরা ক্লাস কার্যক্রমে মূখ্য ভূমিকায় থাকবে, আর শিক্ষার্থী গৌণ ভূমিকায় থাকবে।
#যেসব ক্লাসরুম ল্যাংগুয়েজ শিক্ষার্থীরা বার বার বলে, যেমন: টয়লেটে যেতে পারি, পানি খাব, পেন্সিল কাটা, ইত্যাদি অনুমতি শুধুমাত্র ইয়েস/নো বা হাতের ইশারায় হ্যাঁ/না বলেও TTT কমিয়ে আনা যায়।
#একই কথা বার বার বলা পরিহার করতে হবে। অনেক শিক্ষকের ধারণা ক্লাসে একটি কথা বার বার বললে শিক্ষার্থীরা সহজে রপ্ত করবে। সেটা না করে শিক্ষার্থীদের বলার সুযোগ দিলে শিক্ষার্থীদের STT বৃদ্ধিতে লানিং হবে।
#মনে রাখতে হবে STT বৃদ্ধিতে শিক্ষার্থীদের তেমন হাত নেই। এটা শিক্ষকের কৌশলের উপর নির্ভর করে। ৬০ মিনিটের একটা ক্লাস সময়ে ৩ ভাগের ১ ভাগ সময় অর্থাৎ ২০ মিনিট TTT আর অবশিষ্ট ৪০ মিনিট ৪০ জন শিক্ষার্থীর প্রতিজন মাত্র ১ মিনিট করে গড়ে পাচ্ছে। আবার এই ৪০ জনের মধ্যে সাধারণত ৫/৭ জন STT পেয়ে থাকে।
#শিক্ষক যখন কোন প্রশ্ন করে তখন যারা হাত উঠায় তাদের মধ্যে থেকে দু'চার জন ভাল শিক্ষার্থীকে কথা বলার সুযোগ দেয়। এতে দেখা যায়, কিছু শিক্ষার্থী STT এক সেকেন্ডও পায় না।
#সুতরাং শিক্ষক যদি খুব সুসংগঠিত লেসন প্লান না করে তাহলে STT কোনক্রমেই বৃদ্ধি পাবে না। গবেষণায় দেখা গেছে, TTT এ শিক্ষার্থী শুধু শ্রবণ করে যাতে শিখন মাত্র ৫%।আর যেকোন দ্বিতীয় ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে STT এর কোন বিকল্প নেই। আর শিখন যদি শিক্ষার্থীকে সম্পৃক্ত করে করা যায় তখন ন্যুনতম ৭৫% শিখন ঘটে।
#তাই কীভাবে STT বাড়ানো যায় সেই কৌশল শ্রেণিতে প্রবেশের আগেই শিক্ষক ঠিক করে নিবেন।
সংগ্রহ: জনাব দেলোয়ার হোসেন, প্রাক্তন উপপরিচালক।।